ভারতের মিডিয়া: প্রোপাগান্ডার নতুন সম্রাট! India's media: the new emperor of propaganda!

Facebook link :  

https://www.facebook.com/share/p/1GJvdHdycX/
Youtube link : 
https://youtu.be/8oiYdUOkCaw?si=KP8QlkXyoYve6moZ

মিডিয়ার কাজ সত্য তুলে ধরা। কিন্তু ভারতীয় মিডিয়ার কাছে সত্য যেন হারিয়ে যাওয়া এক মূল্যবান রত্ন, যা খুঁজে পাওয়ার চেয়ে মিথ্যার চাষবাসই তাদের প্রিয়। একবার নয়, হাজারবার মিথ্যা বললে তা সত্যে পরিণত হবে এই দর্শনকে তারা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

তাদের খেলা খুবই সরল, কিন্তু ভয়ানক। একদিকে হিন্দু নির্যাতনের গল্প বানিয়ে প্রচারের ফাঁদ পাতে, অন্যদিকে বাংলাদেশের মুসলিমদের এমন এক ভয়ঙ্কর রূপ আঁকে, যেন তারা হিংস্র পশু। এ যেন সত্যের বিপরীতে দাঁড়িয়ে মিথ্যার হাত ধরে হাঁটার এক অন্ধকার পথ।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভুয়া তথ্য ছড়ানোয় শীর্ষস্থানে রয়েছে ভারত। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ২০২৪ গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মিথ্যা তথ্য (ডিসইনফরমেশন) এবং ভ্রান্ত তথ্য (মিসইনফরমেশন) ভারতে বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।

 

ভারতীয় মিডিয়ার মিথ্যার জাল

১. হিন্দু নির্যাতনের কল্পকাহিনি:
ভারতীয় মিডিয়ার প্রিয় বাংলাদেশকে এমনভাবে উপস্থাপন করা, যেন এখানকার হিন্দুরা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার। তারা গল্প বানায়, অতিরঞ্জিত করে, আর এমনভাবে প্রচার করে যে মানুষ তা বিশ্বাস করতেই বাধ্য হয়।

২. বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র প্রমাণের নাটক:
তাদের প্রোপাগান্ডার দ্বিতীয় অধ্যায় হলো বাংলাদেশের মুসলিমদের উগ্রপন্থী হিসেবে তুলে ধরা। বিশ্ববাসীর সামনে তারা এমন এক ছবি আঁকে, যেন বাংলাদেশে শান্তি শব্দটি শুধুই বইয়ের পাতায়।

Gfx

কিন্তু কেন এই মিথ্যার খেলা?

ভারতীয় মিডিয়ার লক্ষ্য খুব পরিষ্কার:

. সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো:

এই মিথ্যা গল্পগুলো দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে অবিশ্বাস আর ঘৃণা ছড়ায়। এতে বাংলাদেশে এক অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

. আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা:

এই প্রচারণা বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে এক বিপজ্জনক দেশ হিসেবে উপস্থাপন করে। এতে বিনিয়োগ, পর্যটন সবকিছুর উপর প্রভাব পড়ে।

. রাজনৈতিক বিভাজন:

দেশের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করাই তাদের আরেকটি লক্ষ্য। বিভ্রান্তি ছড়িয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির মাধ্যমে তারা নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়।

. আঞ্চলিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা: বাংলাদেশের দুর্বল অবস্থান তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার।

Gfx

  • ২০২৩ সালের দ্বিতীয় ভাগে ইসলামবিরোধী বক্তব্যের হার ৬২% বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিন একটি করে ঘটনা ঘটছে বলে একটি ওয়াশিংটন-ভিত্তিক গবেষণায় জানানো হয়েছ
  •   হিন্দু জাতীয়তাবাদ এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি করে যেখানে ৬৪% হিন্দু মনে করেন, "হিন্দু হওয়া" ভারতীয় পরিচয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  •   ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ঘটে যাওয়া ধর্মীয় ঘৃণামূলক অপরাধের ৯০% ঘটেছে ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রায় ৫০০% বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • গরু সুরক্ষার নামে সহিংসতায় বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে অন্তত ৪৪ জন নিহত এবং ২৮০ জন আহত হয়েছে।
  •  প্রায় ৭৯% ভারতীয় মুসলমান বিশ্বাস করেন, তারা ভবিষ্যতে আরও সহিংসতার শিকার হবেন এবং সরকার দ্বারা নিপীড়িত হবেন। এটি তাদের অর্থনৈতিক সামাজিক অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত করছে।
  •  ভারতে মুসলমানদের ওপর সহিংসতার প্রকোপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘ ওআইসির মতো সংস্থাগুলো বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।


এই মুহূর্তে, আমাদের সময়ের দাবী হলো সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়া। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি নৈতিক দায়িত্ব যে, তাঁরা শান্তি, সম্প্রীতি, এবং মানবিক মূল্যবোধ রক্ষায় এগিয়ে আসবেন।

এমন সময়ে, যখন সমাজে ভুল তথ্য এবং ভ্রান্ত ধারনার মেঘ জমাট বাঁধছে, তখন সত্যের আলো জ্বালিয়ে দেওয়া জরুরি। নিজের অবস্থান থেকে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি আশেপাশের মানুষকে শান্ত রাখার আহ্বান জানানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, ইতিহাস সাক্ষী—সত্যকে কখনো দমন করা যায় না। দিনের শেষে, ন্যায় এবং সততারই বিজয় হয়।

তাই আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে দেশের মঙ্গল কামনায় এগিয়ে আসি। সত্যের পথের যাত্রা সহজ নয়, কিন্তু এই যাত্রার প্রতিটি পদক্ষেপই একদিন পরিবর্তনের গল্প হয়ে উঠবে।




 

 

 

Post a Comment

0 Comments